অ্যান্টি ব্লু লাইট লেন্স কেন ব্যবহার করবেন? 1

অ্যান্টি ব্লু লাইট লেন্স কেন ব্যবহার করবেন?

অ্যান্টি ব্লু লাইট লেন্স কেন ব্যবহার করবেন? 2

অ্যান্টি ব্লু লাইট লেন্স নিয়ে কথা বলতে গেলে প্রথমেই আমাদের জানতে হবে ব্লু লাইট বা নীল আলো সম্পর্কে।
আমরা যে আলো দেখি অর্থাৎ দৃশ্যমান আলোতে রংধনুর সাতটা রঙই থাকে। বেগুনী, নীল, আসমানি, সবুজ, হলুদ, লাল সবগুলোই। এদের মধ্যে লাল আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য সবচেয়ে বেশী আর বেগুনী আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য সবচেয়ে কম। যে আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য যতো বেশি, তার শক্তি বা এনার্জি ততো কম। আর যে আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য যতো কম, তার শক্তি ততো বেশি। সেই হিসেবে বেগুনী আলোর শক্তি সবচেয়ে বেশী, লাল আলোর সবচেয়ে কম। শক্তির বিচারে নীল আলোর শক্তি শুধু বেগুনী রঙের থেকে কম। বেশী শক্তির কারণে এই বেগুনী বা নীল রঙের আলোকে High Energy Visible Light বা HEV লাইট বলা হয়।

এসব HEV আলোগুলোর রয়েছে ক্ষতিকর প্রভাব । এদের মধ্যে নীল আলো আমাদের শরীরের শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়াগুলোর যে ২৪ ঘণ্টার একটা শরীরচক্র Circadian Rhythm আছে সেটার ব্যাঘাত ঘটায়। শুধু তাই নয়, এর কারণে সাধারণ চক্ষু অবসাদ বা Eye Strain থেকে শুরু করে স্থায়ীভাবে দৃষ্টিশক্তি হ্রাস পেতে পারে। আর এই প্রভাবগুলোর বিস্তার ঘটে ধীরে ধীরে, ফলে আমরা তাৎক্ষনিকভাবে এর ক্ষতি বুঝতে পারিনা। তাই আমাদের চোখকে নীল আলো থেকে দূরে রাখা প্রয়োজন।
আমাদের প্রাত্যহিক জীবনে দিনেরবেলা হলো কাজ করার সময় আর রাত হলো বিশ্রাম নেবার বা ঘুমানোর সময়। নীল আলো ঘুমানোর হরমোন মেলাটোনিন এর ক্ষরণ কমিয়ে দিয়ে আমাদের সজাগ করে রাখে। তাই দিনেরবেলা সূর্য থেকে প্রচুর পরিমাণে নীল আলো এসে আমাদের চোখে ঢুকলেও তা আমাদের শারীরবৃত্তীয় চক্রের উপর কোনো প্রভাব ফেলে না। কিন্তু রাতেরবেলা নীল আলোর প্রভাব আমাদের ঘুমাতে বাধা দেয় যা দীর্ঘমেয়াদে ইনসমনিয়া রোগের জন্ম দিতে পারে।

আমরা প্রতিদিন যেসব ডিসপ্লে ডিভাইস ব্যবহার করি, যেমন টেলিভিশিন, স্মার্টফোন, ট্যাবলেট, কম্পিউটার ইত্যাদি থেকে প্রচুর পরিমাণে নীল আলো নির্গত হয়। আর আমরা যেহেতু দীর্ঘসময় এসব স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকি, তাই এর প্রভাব সূর্যের নীল আলোর থেকেও বেশী ক্ষতিকারক। এই ক্ষতি থেকে চোখকে সুরক্ষিত রাখতে অ্যান্টি ব্লু লাইট লেন্সের চশমা ব্যবহার করা হতে পারে সর্বোত্তম সমাধান। এসব চশমার লেন্সে নীল আলো প্রতিরোধী বিশেষ ধরণের কোটিং দেওয়া থাকে, যা একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ নীল আলোকে প্রতিফলিত করে। এতে শুধু পরিমিত পরিমাণ নীল আলো চোখে প্রবেশ করতে পারে। ফলে টিভি দেখলে, কম্পিউটারে কাজ করলে বা গেম খেললেও চোখে ক্লান্তি বোধ হয়না। সেইসাথে রাতে আরামদায়ক ঘুম নিশ্চিত করে। 

তাই আপনি যদি কম্পিউটারে কাজ করেন, গেম খেলেন বা স্মার্টফোন ঘাঁটাঘাঁটি করেন তা যতো কম সময়ই হোক না কেন, অবশ্যই নীল আলো প্রতিরোধী বা অ্যান্টি ব্লু লাইট লেন্সের চশমা ব্যবহার করুন।

Leave a Reply

Change