চশমা তৈরিতে বহুল ব্যবহৃত উপাদানগুলো…

আচ্ছা চিন্তা করে দেখুন তো, আপনি কষ্টার্জিত টাকায় যা কিনছেন; তা সম্পর্কে আপনার যথেষ্ট ধারণা থাকা উচিত নয় কি! অবশ্যই উচিত। এমনকি ক্রেতা হিসেবে এটি আপনার অধিকারও বটে।

এই ব্লগে আমরা জানবো Lunettes-এ অ্যাভেইলেবল চশমার ফ্রেমগুলো যেসব উপাদান দিয়ে তৈরি, সেগুলো সম্পর্কে।

১/ পলিকার্বোনেটঃ
পলিকার্বোনেট হচ্ছে এক ধরণের শক্ত ও স্বচ্ছ প্লাস্টিক উপাদান। এখনকার সময়ের স্মার্টফোনগুলোর কল্যাণে পলিকার্বোনেটের নাম শুনে থাকবেন নিশ্চয়ই। এর আরেকটি ব্যবহারের কথা না বললেই নয়। বুলেট-প্রুফ গ্লাস তৈরির একটি অপরিহার্য উপাদান কিন্তু পলিকার্বোনেট।
এটি সাধারণ প্লাস্টিকের চেয়ে ওজনে হালকা এবং 100% UV সুরক্ষা প্রদান করে। তাই এর তৈরি ফ্রেম ও লেন্সগুলো শিশুদের এবং শরীরচর্চা করেন এমন প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য সর্বোত্তম।

২/ অ্যাসিটেটঃ
পূর্বে ব্যবহৃত প্লাস্টিকের ভঙ্গুরতা এবং অন্যান্য সমস্যার কারণে 1940 এর দশকের শেষের দিকে অ্যাসিটেট উপাদান প্রথম চশমার জন্য ব্যবহৃত হয়েছিল এবং বর্তমানে চশমাশিল্পে এটি ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। 
চশমায় যেটা ব্যবহার করা হয় সেটি মূলত সেলুলোজ অ্যাসিটেট। সেলুলোজ অ্যাসিটেট হল একটি নন-পেট্রোলিয়াম-ভিত্তিক প্লাস্টিক, যা বিশুদ্ধ প্রাকৃতিক সেলুলোজ থেকে তৈরি। এটি একটি স্বচ্ছ, চকচকে, বেশ শক্ত এবং UV সুরক্ষাযুক্ত থার্মোপ্লাস্টিক। সেলুলোজ অ্যাসিটেট একটি তুলা-ভিত্তিক প্লাস্টিক যা হাইপোঅ্যালার্জেনিক। তাই যদি আপনার প্লাস্টিক বা মেটালে অ্যালার্জি থাকে, তবে অ্যাসিটেট আপনার জন্য একটি কার্যকর বিকল্প হতে পারে।

৩/ টিআর ৯০ঃ
TR90 একটি থার্মোপ্লাস্টিক উপাদান যা অবিশ্বাস্যভাবে টেকসই, নমনীয় এবং হালকা ওজনের। TR90 দিয়ে তৈরি ফ্রেম অত্যন্ত আরামদায়ক। যেহেতু এটি নমনীয়, তাই চাপের দিয়ে সুবিধামতো ফিটিং করে নেওয়া যায়। ফলে এর তৈরি ফ্রেমগুলো আপনার মুখে আরামদায়কভাবে এঁটে যাবে। TR90 ফ্রেমগুলো ফিজিক্যালি হাইপারঅ্যাক্টিভ প্রাপ্তবয়স্ক এবং বাচ্চাদের জন্য তৈরি করা হয়েছে। যেহেতু উপাদানটি নমনীয়, তাই সহজে ফ্রেম ভাঙ্গা বা বেঁকে যাওয়ার সম্ভাবনা অনেক কম। এছাড়াও TR90 ফ্রেমে একটি রাবারের মতো টেক্সচার থাকায় দেখতে যেমন দারুণ লাগে, তেমনি পরলেও একটা প্রিমিয়াম ফিল পাওয়া যায়। 
TR-90 হাইপোঅ্যালার্জেনিক। তাই যাদের ত্বক সংবেদনশীল, তাদের জন্য TR90 ফ্রেমগুলো একটি ভাল বিকল্প।

৪/ অ্যাুমিনিয়াম অ্যালয়ঃ
অ্যালুমিনিয়াম অ্যালয় হল একটি সংকর ধাতু, যাতে অ্যালুমিনিয়াম প্রধান উপাদান। এর সাথে খাদ হিসেবে তামা, ম্যাগনেসিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, সিলিকন, টিন, দস্তা ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়। সংকর ধাতু হওয়ায় এটি ওজনে হালকা এবং অত্যন্ত টেকসই। ফলে এটি দিয়ে তৈরি ফ্রেম নিশ্চিন্তে ব্যবহার করা যায় অনেকদিন।
একটা রেফারেন্স দিই, তাহলে বুঝতে সুবিধা হবে যে এটা কতোটা টেকসই। বিমান এবং রকেট তৈরিতেও ব্যবহৃত হয় অ্যাুমিনিয়াম অ্যালয়। 

৫/ টাইটেনিয়াম অ্যালয়ঃ
টাইটানিয়াম অ্যালয়ও একটি সংকর বা মিশ্র ধাতু যা টাইটানিয়াম এবং অন্যান্য রাসায়নিক উপাদান যোগ করে তৈরি করা হয়। এই ধরনের সংকর ধাতুগুলোর প্রচণ্ড বেশি দৃঢ়তা রয়েছে (এমনকি চরম তাপমাত্রায়ও)। এগুলো ওজনে হালকা, অসাধারণরকম টেকসই ও চরম তাপমাত্রা সহ্য করার ক্ষমতা রয়েছে। তাই বিমান, মহাকাশযান,ব্যয়বহুল স্পোর্টস কার, বাইসাইকেল, মেডিকেল ডিভাইস, দামি গয়না ইত্যাদি তৈরিতে এই টাইটেনিয়াম অ্যালয় ব্যবহার করা হয়। তাহলে বুঝতেই পারছেন যে এই ধাতুর তৈরি ফ্রেমগুলো কতোটা ডিউরেবল! 

Leave a Reply

Change