মনে করুন, একটা ঝকঝকে রৌদ্রজ্জ্বল দিনে আপনি রিকশা করে কোথাও যাচ্ছেন। অথবা কাজ সেরে সাইকেল কিংবা মোটরসাইকেলে বাড়ী ফিরছেন। সামনে থেকে আসা একটা ঝাঁ চকচকে গাড়ির বনেটে সূর্যের আলো প্রতিফলিত হয়ে সরাসরি আপনার চোখে গিয়ে পড়লো। হঠাৎ করে তীব্র আলোর ঝলকানি চোখে পড়ায় আপনি কিছুক্ষণ ধরে বাকি সবকিছু প্রায় অন্ধকার দেখতে লাগলেন। রাস্তাঘাটে এরকম অভিজ্ঞতা কমবেশি আমাদের অনেকেরই হয়েছে।
সাধারণত যেকোনো চকচকে জায়গায় আলো এসে পড়লে প্রতিফলনের মাধ্যমে বেশ কিছু বাড়তি আলো আমাদের চোখে প্রবেশ করে। ফলে কিছুক্ষণের জন্য আমাদের চোখ ধাঁধিয়ে যায়, যা চোখে এক ধরণের অস্বস্তির সৃষ্টি করে। পোলারাইজড লেন্স এমন একটি লেন্স যা তার বিশেষ ফিল্টারের মাধ্যমে এই প্রতিফলিত বাড়তি আলোকে আটকে দেয়। এর ফলে আমরা ঠিক ততটুকুই দেখতে পাই, যতটুকু আমাদের দেখা দরকার। আর এই লেন্স দিয়ে সানগ্লাস তৈরী করলে সেটিকে পোলারাইজড সানগ্লাস বলা হয়।
পোলারাইজড সানগ্লাস বহু আগে থেকেই ফিশারমেন ও নাবিকদের কাছে জনপ্রিয়। কারণ এই সানগ্লাসগুলো জলের উপর প্রতিফলিত সূর্যরশ্নির তীব্রতা কমাতে সহায়ক হয়ে থাকে। তবে আজকাল আউটডোরে এর ব্যবহার অনেক বেশি প্রয়োজনীয় হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে স্কিয়ার, বাইকার, গল্ফার এবং ড্রাইভিং এর জন্য। এছাড়াও চোখের সার্জারি করা রোগীদের এবং উজ্জ্বল আলোর প্রতি সংবেদনশীল মানুষদের জন্যও পোলারাইজড সানগ্লাস খুবই উপকারি। কারণ, যেকোন সাধারণ লেন্সের চেয়ে পোলারাইজড লেন্স দিয়ে অধিকতর উজ্জ্বল ও মসৃণ দৃশ্য দেখা সম্ভব।
ড্রাইভিং এর জন্য পোলারাইজড লেন্স সবচেয়ে উপযুক্ত হিসেবে বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত। কেননা সাধারণ চশমা যেখানে সবরকম আলোই চোখে ঢুকতে বাধা প্রদান করে, সেখানে পোলারাইজড চশমা শুধু অতি উজ্জ্বল আলোকরশ্মিগুলোকে আটকে দেয়। তাই আপনি যদি ড্রাইভিং করেন কিংবা আপনার যদি চোখ ধাঁধানো আলো বিরক্ত লাগে, তাহলে আপনি একটি পোলারাইজড লেন্সের চশমা ব্যবহার করতে পারেন। এছাড়াও রোদে ক্ষতিকর আল্ট্রাভায়োলেট রশ্নি ১০ গুন পর্যন্ত বেশি শক্তিশালী হয়ে থাকে। পোলারাইজড সানগ্লাস যে শুধু বাড়তি আলো আটকে দেয় তাই নয়, বরং ক্ষতিকর ইউভি আলোকেও চোখে ঢুকতে দেয়না।
তাই চোখের অস্বস্তি দূরে রাখা কিংবা পরিষ্কার ও মসৃণ দৃষ্টি, মোটকথা দিনের বেলা চোখের পূর্ণ সুরক্ষায় পোলারাইজড সানগ্লাসের বিকল্প নেই।